
naba aashray
about
আর্ত, পীড়িত ও দিশাহীন ভবঘুরে মানুষদের আশ্রয় দেওয়া ও তাঁদেরকে আমাদের সংস্থায় রেখে তাঁদের সেবা করে, চিকিৎসা করে তাঁদের আপন ঠিকনায় পাঠানো আমাদের ব্রত।
এই ধরনের কাজ আমি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি, এবং এই কাজ আরও ব্যাপক ভাবে করার জন্য এই "নব আশ্রয়" নামের সেবামূলক সংস্থার সূচনা করেছি। এটি সম্পূর্ণ অলাভজনক সংস্থা এবং এই সংস্থা চালানোর জন্য অবশ্যই লালগোলাবাসীর সাহায্যের প্রয়োজন হবে।
মানসিক ভারসাম্যহীন ও অসহায় ভবঘুরে অনেক মানুষ আমরা লালগোলা থেকে উদ্ধার করেছি। এবং তাঁদের সেবা ও চিকিৎসা দিয়ে ও তাঁদের ঠিকানা উদ্ধার করে তাঁদের নিজেদের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি। কালিয়াচক, মহারাষ্ট্র, মেদিনীপুর, মালদা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সেই ভারসাম্যহীন মানুষগুলোকে সুস্থ করে আমরা তাঁদের বাড়ি পাঠিয়েছি। সেই মানুষগুলো হয়তো কারও বাবা, মা, ভাই , বোন। ২০১৬ সাল থেকে এই সমস্ত কাজ আমি পুরোপুরি ভাবে করছি।
এছাড়াও আমি এবং আমার সহকর্মীরা দীর্ঘদিন রক্তদান শিবির করে আসছি। যেখানে শিবির হয়, সেখানেই আমরা যাই। কিছু রক্তদাতা (পার্সোনাল ডোনার) আছেন তাঁরা আমার ডাকে এগিয়ে আসেন। পরবর্তীতে আমরা আমাদের সংস্থার পক্ষ থেকে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করবো। সেখানে আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এছাড়াও আমরা আরও কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। লালগোলা ও কৃষ্ণপুর স্টেশনে, কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে, কিংবা লালগোলার আনাচে-কানাচে যেখানেই মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষগুলো থাকে তাঁদের প্রতিদিনের খাবার যোগান দেওয়ার ব্যাবস্থা করা হবে, যাতে তাঁরা অন্তত একবেলা পেট ভরে খেতে পায়।
পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য বৃক্ষরোপন দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি। এখন পর্যন্ত প্রায় দু' হাজার গাছ আমারা লাগিয়েছি। প্রতিবছর অরণ্য দিবসকে সামনে রেখে আমরা কাজগুলো করে থাকি।
এছাড়াও হসপিটালে অনেক অসহায় মানুষ থাকে, তাঁদের চিকিৎসা করার পয়সা থাকে না। সেখানকার ডাক্তারবাবুরা আমাকে ফোন করে সেখানে ডাকেন। ডাক পেয়ে আমি সেখানে ছুটে যাই। নিজের টাকা দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে বহরমপুর পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। পাশাপাশি আমাদের লালগোলার আনাচে কানাচে যে সব অসহায় মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের খোঁজ পেলে লালগোলার প্রশাসকরা আমায় ফোন করে ডাকেন এবং আমি তাঁদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে, তাঁদের বাড়ির ঠিকানা উদ্ধার করে, তাঁদেরকে আমরা তাঁদের সঠিক গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিই। এই কাজ দীর্ঘদিন ধরে আমরা করে আসছি।
কোনো ছেলে তাঁর মাকে ভাত দেয় না, বাবাকে দেখে না, স্টেশনে, বাসস্ট্যান্ডে, বা অন্য কোথাও ফেলে রেখে চলে যায়। সেক্ষেত্রে কোথাও তাঁদেরকে ফেলে দেবার দরকার নেই। আপনারা আমাদের নব আশ্রয়ে তাঁদের রেখে যাবেন। তাঁর আজীবন দায়িত্ব আমরা বহন করবো। তাঁর খাওয়া, পরা, থাকা, চিকিৎসা এবং সৎকার্য পর্যন্ত সমস্ত কাজ আমরা আমাদের সংস্থার তরফ থেকে করবো। এমনও হতে পারে কোনো পরিবারের খাবার জোটে না, আমাদের সংস্থা থেকে তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে এবং সেখান থেকে আমরা তাঁদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিব। যাতে দু' বেলা খেয়ে অন্তত বেঁচে থাকতে পারেন তাঁরা।
এছাড়াও আমরা উদ্যোগ নিয়েছি প্রতি সপ্তাহে লালগোলার সমস্ত অসহায় ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের আমরা অন্ন তুলে দিবো। প্রতি সপ্তাহ প্রথমে দু' দিন। তার পর তিন দিন। অবশেষে প্রতিদিন খাবার দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। তার জন্য আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন।
'নব আশ্রয়' আপনার পাশে আছে, আপনার সাথে আছে।
